নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
মানিকগঞ্জে সিংগাইরে মসজিদের নামের ওকফকৃত জায়গা অবৈধভাবে ভোগদখল করার অভিযোগ উঠেছে মৃত চান্দা খালে ও
ওয়ারিশানদের বিরুদ্ধে। প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি ওই জমি ভোগ করে আসছেন বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী ও মসজিদ কমিটি। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জমি ভোগদখল ছেড়ে দিতে একাধিকবার গ্রাম্য সাশিষের আয়োজন করা হলে স্থানীয় আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতাদের সহযোগিতায় জমির দখল ছাড়ছেন না অভিযুক্ত মৃত চান্দা খার ওয়ারিশানগণ। তিনি উপজেলার আলাইপুর গ্রামের ফতে আলী শিকদারের ছেলে।
এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে রূপসা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে আলাইপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটি।
সরেজমিন ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সিংগাইর পৌর এলাকার আজিমপুর মৌজা ৪৯নং আলাইপুরের মধ্যে এসএ দাগ নং ৩৫৪৫, জমির পরিমাণ ৩৯ শতক। উক্ত জমি প্রায় ৩৩ বছর পূর্বে এলাকার রবিউল শিকদার, রফি উদ্দিন শিকদার ও আছিয়া খাতুনসহ দশজনে আলাইপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের নামে ওয়াকফ করে দেন। এরপর থেকে মসজিদ কমিটি বিভিন্ন লোকের কাছে জায়গাটি লীজ দিয়ে আসছে। একইভাবে স্থানীয় মো. ফরিদ শিকদারকে বাৎসরিক লীজ দেয় মসজিদ কর্তৃপক্ষ। একবছরের লীজের টাকা পরিশোধ করলেও বিগত দুই বছর যাবত কোনো টাকা পরিশোধ না করলে ওই ৩৯ শতক জমির দখল বুঝে নেয়ার জন্য একাধিকবার উদ্যোগ নেয়া হলেও কোনো সুফল পায়নি এলাকাবাসী ও মসজিদ কমিটি।
স্থানীয় বাসিন্দারা ও হাফিজুর রহমান শিকদার জানান, ফরিদ শিকদার মসজিদ, মাদরাসা, ক্লাব সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জিনিসপত্র জোরপূর্বক নিয়ে ব্যক্তি মালিকানায় ব্যবহার করে। মাহফিলের নামে টাকা উঠিয়ে নিজে ভোগ করে। মাহফিলের জন্য দোকান থেকে বাকি নিয়ে পরিশোধ করে না, এর খারাপ প্রভাব মাহফিল ও এলাকাবাসীর উপর পড়ে। কমিটির সভাপতিকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে ফরিদ ও তার জামাই আক্তার শিকদার। এলাকাবাসীর কাছে ফরিদ শিকদার মানেই একটা ঝামেলা। তাই গ্রামের সকল মানুষ মিলে ফরিদ শিকদারকে এখন বয়কট করেছে বলেও জানান তারা।
মসজিদ কমিটির সাবেক সাধরণ সম্পাদক মাহমুদ শিকদার জানান, আলাইপুর গ্রামবাসী ফরিদ শিকদারের জুলুম নির্যাতনে জর্জরিত। সে ৬২তম ইসালে সওয়াব মাহফিলে বাধা প্রদান করেছে। তারাবির নামাজে হাফেজ নিযুক্ত করার কাজে বিভেদ সৃষ্টি করে, মসজিদে কাউকে নামাজ পড়তে দেবেনা বলে হুমকি দেয়।
এ ব্যাপারে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ইউনুস শিকদার বলেন, মসজিদের জমি এক বছরের লীজ নিয়ে টাকাও দেয় না জমেও ছাড়ে না, এখন নিজের বলে দাবি করে। মসজিদ কমিটি ফরিদের আগে পুটিমারি গ্রামের মুরাদকেসহ অনেকেই লীজ দিয়েছি। জমির দখল বুঝে নিতে গেলেই নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় মসজিদ কমিটি ও এলাকারবাসীকে। সে বিভিন্ন তালবাহানা, মামলার হুমকি, অশ্লীল আচরণ ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ফরিদ শিকদারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা শুরু করে পরিচয় জেনে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে ফরিদ শিকদারের জামাই আক্তার শিকদারের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমার শ্বশুর ফরিদ শিকদার মসজিদের ওই জমি তার মায়ের বা দাদির বলে তিনি দাবি করেন।
রূপসা থানার ওসি তদন্ত মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ফরিদ শিকদারের বিরুদ্ধে আলাইপুর মসজিদ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। কোন ঝামেলা না হয়, সেজন্য অভিযোগের ভিত্তিতে ফরিদ শিকদারকে থানায় ডেকে প্রাথমিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে।
Leave a Reply