নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক শাখার ম্যানেজার মো. ইমরান মিঞার বিরুদ্ধে গ্রাহকের কাছে ঘুষ দাবি ও অসদাচরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সোমবার (১৫ জুলাই) উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর বায়রা ইউনিয়নের আলীনগর গ্রামের মৃত পিয়ার আলীর পুত্র আবুল হোসেন (৪৫) এই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী আবুল হোসেন তার ছেলে রহমত আলীকে (২৮) বিদেশে পাঠাতে ঋণের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সিংগাইর শাখার ম্যানেজার মো. ইমরান মিঞার শরণাপন্ন হন। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ম্যানেজার ৩ লাখ টাকা ঋণ দিতে আবুল হোসেনকে আশ্বস্ত করেন। সেই সঙ্গে ঋণের বিপরীতে খরচ বাবদ ১০ হাজার টাকা লাগবে বলে জানান। আবুল হোসেন এতে গড়িমসি করে চলে যান।
গত ৯ জুলাই সকাল ১১টার দিকে ভুক্তভোগী আবুল হোসেন অভিভাবক হিসেবে জনৈক আমিনুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ওই ব্যাংকে যান। ম্যানেজার ইমরান মিঞা সঙ্গে থাকা লোক দেখে হঠাৎ চটে যান। বিভিন্ন অজুহাতে তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন এবং ঋণ দেয়া যাবে না মর্মে জানিয়ে দেন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে ম্যানেজার উত্তেজিত হয়ে সিকিউরিটি ডেকে অফিস থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দিলে গ্রাহক চলে যান বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
ভুক্তভোগী আবুল হোসেন বলেন, প্রবাসীদের কল্যাণে স্বনামধন্য ঋণদান সেবা প্রতিষ্ঠান প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ম্যানেজার সাহেবের ঋণদানের বিপরীতে গ্রাহকের কাছে ঘুষ দাবি করার বিষয়টি ন্যক্কারজনক। এছাড়া আমাদের সঙ্গে অসদাচরণ করে ঋণদান থেকে বঞ্চিত করায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত ও হতবাক হয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ম্যানেজারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের জোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এর আগে গত ২৩ জুন সিংগাইর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমকে তুচ্ছ কথার জেরে ওই ম্যানেজার অপমান করে ব্যাংক থেকে বের করে দেন। এ ঘটনায় তিনি মো. ইমরান মিঞার বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
স্থানীয় হাবিবুর রহমান, জাহাঙ্গীর রমিজ উদ্দিন ও লালনসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, উনি বরাবরই একজন খারাপ লোক। যারা প্রবাসে আসা-যাওয়া করে থাকেন সেই সকল গ্রাহকের সঙ্গে ও তিনি অসদাচরণ করেন এবং ঋণ প্রদানের কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে হঠাৎ বন্ধ করে দেন। অধিকাংশ গ্রাহক ভোগান্তির শিকার হন। ব্যাংকের সুনাম ও গ্রাহক ধরে রাখতে ম্যানেজারের অন্যত্র বদলি জরুরি।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সিংগাইর শাখার ম্যানেজার অভিযুক্ত ইমরান মিয়া বলেন, আমাদের এখান থেকে ঋণ নিতে হলে খরচ বাবদ ৮ হাজার টাকা লাগে। যৌক্তিক ফি যেটা সেটাই নেয়া হয়। নির্দিষ্ট কিছু লোকের স্বার্থ হাসিলের জন্য আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে পারে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ঢাকা উত্তর অঞ্চল প্রধান মো. মাহবুবুল হাসান বলেন, গ্রাহক আমাদের প্রাণ, তাদের সঙ্গে অসদাচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আর্থিক বিষয়টি খতিয়ে দেখে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পলাশ কুমার বসু বলেন, আগে একটা অভিযোগ পেয়েছি। আজকেরটা এখনো হাতে পাইনি। দুটো একসঙ্গে করে ব্যাংক ম্যানেজারকে নোটিশ করা হবে।
Leave a Reply