নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার সীমান্তবর্তী জামশা ইউনিয়ন পরিষদ অধিকাংশ রাস্তাই কাঁচা। ফলে জনদুর্ভোগ চরমে। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদে আসা-যাওয়ার রাস্তাগুলোও ১৭ বছরেও পাকা হয়নি। ফলে পরিষদে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষকে পড়তে হচ্ছে ভীষণ দুর্ভোগে। সাথে ইউনিয়নের ১৪টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষকেও পোহাতে হয় এই দুর্ভোগ। পাঁচগাছিয়া (পশ্চিম) ইউনিয়ন পরিষদ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এবং দাউদকান্দি-মতলব সড়কটিও এই ইউনিয়নের উপর দিয়েই চলে গেছে। ইউনিয়নের ১৪টি গ্রামের সাধারণ মানুষকে তাদের নাগরিক সেবা পেতে যাতায়াত করতে হয় পরিষদের কাঁচা রাস্তাগুলো দিয়েই। সরজমিনে দেখা যায়, দাউদকান্দি-মতলব সড়কস্থ দরগা বাড়ি থেকে দক্ষিণ বাজারখোলা হয়ে পাঁচগাছিয়া (পশ্চিম) ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার পুরো রাস্তাটিই কাঁচা। তারপর ব্রিকফিল্ড থেকে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তাটিও কাঁচা। ইউনিয়ন পরিষদের দুই প্রান্তে সড়কের এই বেহাল দশার কারণে ইউনিয়ন কমপ্লেক্সে যেতে মানুষের দুভোর্গের কোন শেষ নেই। আর বৃষ্টির দিনে এই কাঁচা রাস্তাগুলো কর্দমাক্ত হয়ে যাতায়াতের দুর্ভোগ দ্বিগুণ ধারণ করে। ফলে মানুষের যেন কষ্টের শেষ নেই। ইউনিয়ন কমপ্লেক্সের পূর্বদিকেই হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও মসজিদ রয়েছে। সেই মসজিদের ইমাম হাফেজ মো. রুহুল আমিন বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে এখানে আছি। এই দীর্ঘদিন পর্যন্ত পরিষদের এই রাস্তাটি আমি কাঁচা দেখে আসছি। ফলে মুসল্লি, মাদ্রাসার ছাত্র ও অভিভাবকদের যাতায়াতের সমস্যাটা দীর্ঘ দিনের। তাই রাস্তাটি পাকা করা খুবই জরুরী হয়ে পড়েছে। দক্ষিণ বাজারখোলা গ্রামের সমাজ সেবক মো. নাছির আহমেদ পাটোয়ারী জানান, পরিষদের কমপ্লেক্সে যাতায়াতের পূর্ব দিকের রাস্তাটিসহ এই ইউনিয়নের অধিকাংশ রাস্তাই এখনও কাঁচাই রয়ে গেছে। দাউদকান্দি উপজেলার মধ্যে আমাদের পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নটি যোগাযোগের দুরবস্থার কারণে সবচেয়ে অবহেলিত হয়ে আছে। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে দেশের বেশির ভাগ স্থানে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে ঠিকই কিন্তু এই ইউনিয়নবাসী সে উন্নয়ন থেকে এখনও বঞ্চিতই রয়ে গেছে। যদিও তিনবারের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন চৌধুরী ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব পালন করছেন, অথচ এখনো খোদ ইউনিয়ন পরিষদে যাতায়াতের দুই পাশের রাস্তাগুলো কাঁচা অবস্থাতেই রয়ে গেছে। দুই একটা সড়ক ছাড়া এই ইউনিয়নের বাকী সব রাস্তাই এখনো কাঁচা। তাই বৃষ্টির সময় কর্দমাক্ত হয়ে রাস্তায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, এই ইউনিয়নে রয়েছে আটটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুইটি উচ্চ বিদ্যালয়, মসজিদ ও মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। ইউনিয়নের জনসাধারণের স্বাস্থ্য সেবা কল্পে রয়েছে তিনতলা বিশিষ্ট একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সও। কিন্তু যোগাযোগের ব্যবস্থা ভালো না থাকায় সেখানে কোনো ডাক্তারই আসতে চায় না।। ফলে হাসপাতালটি পড়ে রয়েছে অবহেলা- অযত্নে। এতে স্থানীয় মানুষ তাদের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। এবং অসুস্থ ও গর্ভবতী রোগীদের সম্মুখীন হতে হচ্ছে নানা ভোগান্তির। রাস্তার এমন দুরবস্থার কারণে হাজার হাজার মানুষ কষ্ট-দুর্দশার শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোতালেব হোসেন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের আসা-যাওয়ার সড়কটি পাকা করার জন্য চেয়ারম্যানকে বারবার বলেছি, তারপরও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। উপজেলা পরিষদেও বেশ কয়েকবার গিয়েছি। তারা বলছেন বাজেট কম থাকার কারণে ঠিকাদার কাজ করতে আগ্রহী নয়্থ। এ ব্যাপারে দাউদকান্দি উপজেলা প্রকৌশলী স্নেহাল রায় বলেন, পাঁচগাছিয়া (পশ্চিম) ইউনিয়ন পরিষদের অধিকাংশ রাস্তাই কাঁচা। চলাচলের দুর্ভোগের বিষয়টি আমরা জানি। এ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিবো।
Leave a Reply