সংবাদ সারাদেশ টোয়েন্টিফোর.কম ডেস্কঃ
পেয়ারা বেগম। বয়স ৫৫ বছর। একজন ক্যান্সারের রোগী। কিছুদিন আগেই তার এ রোগ ধরা পড়েছে। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। ইতিমধ্যে একটি ক্যামোথ্যারাপিও দেয়া হয়েছে। কিন্তু মুশকিল হলো- হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছে।
কর্তৃপক্ষ বলেছে, ভবনটিতে করোনার রোগীর সেবা দেয়া হবে।
আর এ কারণেই অন্যান্য রোগীরা সেবা পাবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন ক্যান্সার রোগী পেয়ারা। হবিগঞ্জ জেলার এ বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালে তাকে অন্য জায়গায় রেখে চিকিৎসা দিতে পারতো। কিন্তু না করে চিকিৎসা বঞ্চিত করেছে। তিনি ইতিমধ্যে বেসরকারি কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করেও চিকিৎসা পাননি।
আরেক রোগী পারভীন। বাত-ব্যথার রোগী তিনি। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসক দেখাতেন। করোনার জন্য চিকিৎসকরা এ ধরনের রোগী সেবা দিচ্ছেন না। পুরান ঢাকার সেকশনে একটি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডাক্তার দেখাতেন শিশু ফুয়াদকে। শিশুটির মা সম্প্রতি ওই ক্লিনিকে চিকিৎসকে দেখানোর জন্য যোগাযোগ করেন। ক্লিনিক থেকে বলা হয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা করোনা কারণে চেম্বারে বসছেন না।
শুধু পেয়ারা বেগম বা পারভীন নন, হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। কখনোবা ভোগান্তিতে পড়ছেন। ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে রোগীরা প্রায় প্রতিদিন চিকিৎসাসেবা নিয়ে নানা অভিযোগ করছেন। এই অভিযোগ দেশের কিছু সরকারি- বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক এবং প্রাইভেট ডক্টরস চেম্বারের বিরুদ্ধে।
রোগীরা অভিযোগ করে বলেছেন, চিকিৎসকদের ঠিকমত তাদের চেম্বারে পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারি হাসপাতালের ক্ষেত্রে বহির্বিভাগে সময়মত চিকিৎসক না পাওয়ার অভিযোগ অহরহ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিসএমএমইউ)-এর মেডিসিন বিভাগের একজন অধ্যাপক এ ব্যাপারে বলেন, যে কোন সময় চিকিৎসাসেবা পাওয়ার অধিকার রোগী রাখেন। প্রতিটি হাসপাতাল ও ক্লিনিককে তাদের নিজস্ব মেকানিজ্যামে রোগীকে অবশ্যই চিকিৎসাসেবা দিতে হবে।
সাধারণ রোগীরা সেবা পাচ্ছেন না এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আমিনুল হাসান মানবজমিনকে বলেন, তাদের কাছেও এমন কিছু্ অভিযোগ এসেছে। তবে রোগীরা অবশ্যই চিকিৎসা পাবেন। রোগীদের একটু ধৈর্য ধরার আহবান জানান তিনি।
Leave a Reply