সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা
ক্ষমতার অপব্যবহার ,উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ লুট ও ঘুষ-দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দিঘলীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাটুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মোঃ শফিউল আলম জুয়েল এর বিরুদ্ধে ওই ইউনিয়নের ১১ জন মেম্বার (ইউপি সদস্য) অনাস্থা জানিয়েছেন। এবিষয়ে ১১জন মেম্বারের স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অনাস্থা প্রস্তাব সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দেওয়া হয়েছে।
অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেন ইউপি সদস্য মামুন হোসেন,হারুন অর রশিদ,রাশেদ মিয়া,শফিকুল ইসলাম, মোশারফ হোসেন, সালাউদ্দিন,রেজাউল করিম (শামসুল), ইন্তাজ আলী ও মহিলা সদস্য সাবিনা ইয়াসমিন, রত্না বেগম এবং আসমা আক্তার।
লিখিত প্রস্তাবে ইউপি সদস্যরা উল্লেখ করেছেন, দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যান বিধি না মেনে নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ভুয়া রেজুলেশন ও সই-স্বাক্ষর দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন। জোর ও ভয় ভীতি প্রদান করে ইউপি সদস্যদের কাছ থেকে স্বাক্ষর আদায় করে তার ইচ্ছেমতো কাজ করতেন ইউপি চেয়ারম্যান। এমনকি ভাষা শহীদের স্বরণে নির্মিত পরিষদ চত্বরের শহীদ মিনার নিজ স্বার্থে ভেঙ্গে ফেলে রেখেছেন পরিষদ চত্বরের পাশে। পরে নতুন করে শহীদ মিনার তৈরি করার কথা বলে প্রকল্পের টাকাও আত্মসাৎ করেন তিনি। এছাড়া পরিষদ চত্বরের বড় বড় অনেক গাছ কেটে বিক্রি করে সেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তার বিরুদ্ধে শত শত অভিযোগ রয়েছে এমনটি অভিযোগ স্থানীয় এলাকাবাসী ও ইউপি সদস্যদের।
ইউপি সদস্যরা জানান, গত তিন বছরে উপজেলা পরিষদ থেকে দিঘুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদে যত প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, বেশির ভাগ প্রকল্পের সভাপতি হয়েছেন চেয়ারম্যান শফিউল আলম জুয়েল। কিছু প্রকল্পে ইউপি সদস্যদের নামমাত্র সভাপতি দেখানো হতো। পরে ভয় দেখিয়ে ওই সদস্যের কাছ থেকে চেকে সই রেখে নিজেই প্রকল্পের টাকা তুলে নিতেন। একই স্থানে বারবার প্রকল্প দেখিয়েও তিনি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এমনকি সদস্যদের বসার জন্য চেয়ার কেনার প্রকল্প দেখিয়েও নতুন চেয়ার না কিনে সেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। তাদের অভিযোগ, তাদের কোনো কাজই দেননি চেয়ারম্যান। পছন্দের লোক দিয়ে কাজ করিয়ে একাই সব লুটপাট করেছেন।
এবিষয়ে দিঘলীয়া ইউপি চেয়ারম্যান সফিউল আলম জুয়েল বলেন, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। তাকে সমাজের কাছে হেয়-প্রতিপন্ন করতে একটি কুচক্রি মহল এমন কাছ করছে বলে তার দাবী।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শান্তা রহমান বলেন, ইউপি সদস্যদের অনাস্থা প্রস্তাবের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অনাস্থাপত্রের বিষয়ে সরকারি বিধি মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply