নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
বরিশালে অরক্ষিত রেকর্ড রুম, আতঙ্কিত হয়েছেন জমি, প্লাট বা ফ্ল্যাটের মালিকগণ । কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে থাকা বরিশাল জেলা মহাফেজখানা বহিরাগত ৯ ব্যক্তির কারণে অরক্ষিত হয়ে পড়েছে
জমির সিএস, আরএস, এসএ ও বিএস পর্চার মূল নথিপত্র রক্ষিত থাকে মহফেজখানায় (রেকর্ড রুমে)। এগুলো করতে হলে নাম-পরিচয় লিপিবদ্ধ করতে হয়। । অফিস চলাকালে বহিরাগতদের প্রবেশে জমি মালিকদের গুরুত্বপূর্ণ নথি চুরিসহ বিভিন্ন অপকর্মের ঘটনা ঘটেছে। অরক্ষিত রেকর্ড রুম থেকে নথি হারানোর শঙ্কায় রয়েছেন বরিশালের জমি মালিকরা। অভিযোগ আছে, ওই ৯ বহিরাগতকে দিয়ে অপকর্ম করতে সহায়তা করছেন মহফেজখানায় দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা কয়েকজন কর্মচারী।তথ্যমতে, ২০২০ সালে ডাটা এন্ট্রিকারী হিসাবে অস্থায়ী নিয়োগ পান ৩৫ ব্যক্তি। ২০২২ সালে ওই প্রজেক্ট শেষ হলেও ৯ ব্যক্তি থেকে যান কয়েকজন অফিস সহকারীর সহায়তায়। এই বহিরাগতরাই জমির পর্চা বাণিজ্য করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বহিরাগতরা হলেন-মাকসুদ, শাহরিয়ার, মারুফ, ইমরান, রাজ্জাক, রাহাত, রায়হান, জুয়েল ও রুহুল আমিন।
একাধিক জমির মালিক বলেন, ওই নয়জন টাকার বিনিময়ে জমির পর্চা সরিয়ে ফেলার কাজ করেন। ছয় মাস আগে জেলা মহফেজখানায় চুরির ঘটনা ঘটে। চুরির ঘটনায় তখন কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা হলেও কেউ গ্রেফতার হয়নি। কী চুরি হয়েছে সেটাও প্রকাশ করেনি মহাফেজখানা কর্তৃপক্ষ।
মুলাদী উপজেলার বাসিন্দা রহমান আকন বলেন, এক বছর আগ থেকে জমির আরএস পর্চা উঠানোর আবেদন দিলেও আজ পর্যন্ত পাইনি। আমার ধারণা, পরিকল্পিত চুরির ঘটনা সাজিয়ে অনেকের কাগজপত্র সরিয়েছে একটি চক্র।
বাকেরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা বারেক মোল্লা বলেন, সরকারি নিয়মমাফিক জমির পর্চার জন্য আবেদন করে পেতে ১২০ টাকা দরকার হয়। অথচ দেড় হাজার থেকে ২ হাজার টাকার কমে পর্চা পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কেউ প্রতিবাদ করলে পড়তে হয় ঝামেলায়। আমিসহ অনেক ভুক্তভোগী আছেন।
ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, এই মহাফেজখানায় চাকরির শুরু থেকে ৩৫ বছর পর্যন্ত আছেন অফিস সহকারী আলাউদ্দিন। একযুগ ধরে কর্মরত আরেক অফিস সহায়ক নাসির। এ রকম বেশ কয়েকজন আছেন বছরের পর বছর। তারা হলেন, বরুন কুমার সাহা, কমল কান্তি, ফারুক হোসেন, হানিফ হোসেন। এদের অবৈধ বাণিজ্য সচল রাখতেই ডাটা এন্ট্রিকারী ও সূচি করার অজুহাতে ওই নয়জনকে রেকর্ড রুমে রেখেছেন তারা। অভিযুক্ত আলাউদ্দিন বলেন, আমি কাজ জানার কারণে বদলি হলেও সিনিয়র কর্মকর্তারা আমাকে আবার এই অফিসে নিয়ে আসেন। আরেক অভিযুক্ত নাসিরকে একাধিকবার কল করা হলেও ফোন ধরেননি। অভিযোগ অস্বীকার করে বরুন কুমার বলেন, আমি তিন বছর ধরে এখানে আছি।
সহকারী কমিশনার (মহাফেজখানা) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মার্জানুর রহমান বলেন, আমি এ শাখায় নতুন যোগ দিয়েছি। বিগত দিনের ঘটনা আমার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply