1. nasiruddinsami@gmail.com : admin :
December 13, 2024, 10:12 am

ঢাকা উত্তর সিটির ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কাশেম মোল্লা শতকোটি টাকার মালিক। অস্বাভাবিক সম্পদ বৃদ্ধির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে মাঠে নেমেছে।

  • আপডেট সময় : Saturday, August 3, 2024
  • 158 বার দেখা হয়েছে

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর  মো. আবুল কাশেম মোল্লা আকাশ। ২০১৫ সালে তিনি যখন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন তখন তার সম্পদ বলতে ছিল নগদ ৭৪৩ টাকা, ১০ লাখ ৪৪ হাজার টাকার একটি গাড়ি ও ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার আসবাবপত্র। কাউন্সিলর হওয়ার পর গত ৯ বছরে তিনি শতকোটি টাকার মালিক হয়েছেন। অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমেই তা অর্জিত হয়েছে বলে অভিযোগ। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার অস্বাভাবিক সম্পদ বৃদ্ধির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে মাঠে নেমেছে। দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমান অভিযোগটি অনুসন্ধান করছেন।নথিপত্র অনুযায়ী, চলতি বছর মার্চ মাসে কাউন্সিলর কাশেম মোল্লাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার মাধ্যমে ১০০ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ জমা পড়ে দুদকে। কমিশন অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য দায়িত্ব দিয়েছে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমানকে। তিনি সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে এ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র চেয়ে গত ১০ জুন ব্যাংক, বীমা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, সিটি করপোরেশন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রিহ্যাব, রেজিস্ট্রি অফিস ও ভূমি অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি পাঠান। চিঠিতে কাউন্সিলর আবুল কাশেম মোল্লা, রিভা মেহনাজসহ তার দুই সন্তানের নামে থাকা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য দুদকে পাঠাতে বলা হয়।

এর আগে গত ১ এপ্রিল মাদ্রাসার সংশ্লিষ্ট নথিপত্র ও আবুল কাশেমের ব্যক্তিগত নথিপত্র চেয়ে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা। চিঠিতে ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে মিরপুরের মসজিদুল আকবর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার নামে পরিচালিত ব্যাংকের হিসাব-বিবরণী, ওই সময়ের বিভিন্ন সভার রেজল্যুশনসহ আয়-ব্যয়ের বিবরণী ও এখন পর্যন্ত ম্যানেজিং কমিটির কার্যক্রমের বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়। আবুল কাশেম মোল্লার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, এনআইডি, পাসপোর্ট, ব্যাংক হিসাবের তথ্যাদি, নির্বাচনী হলফনামা, আয়কর নথিসহ অন্যান্য রেকর্ডপত্রও চাওয়া হয়। একই সঙ্গে তিনি সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর হিসেবে কী পরিমাণ বেতন, সম্মানী ও অন্যান্য সুবিধা পেয়েছেন, তার বিস্তারিত তথ্যও চাওয়া হয়।

উত্থাপিত অভিযোগে বলা হয়েছে, কাউন্সিলরের গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং থানার সাত গরিমা গ্রামে। এখন তিনি রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বর সেকশনের ডি ব্লকের ২ নম্বর রোডের ১৫ নম্বর বাসায় থাকেন। তিনি ২০১৫ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে যে হলফনামা দাখিল করেছিলেন, সেটি ও তার আয়কর নথি এ প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।

আয়কর নথির তথ্যানুযায়ী, ২০১৫ সালে নির্বাচনের আগে ২৭ মার্চ পর্যন্ত সময়ে আবুল কাশেম মোল্লার হাতে নগদ ৭৪৩ টাকা ছিল। এ ছাড়া তার ১০ লাখ ৪০ হাজার ৬৫৭ টাকা মূল্যের একটি মাইক্রোবাস, ৬০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিকস মালামাল ও ৮০ হাজার টাকার আসবাবপত্র ছিল। এর বাইরে তার কোনো ফ্ল্যাট, প্লট, কৃষি-অকৃষি জমিসহ স্থাবর সম্পদ ছিল না। কিন্তু ৯ বছরে তিনি অনেক সম্পদের মালিক হয়েছেন।

দুদকের এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেছেন, কাউন্সিলর আবুল কাশেম মোল্লার অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধান কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন। কিছু রেকর্ডপত্র দুদকে এসে পৌঁছেছে। সব রেকর্ডপত্র পাওয়ার পর পর্যালোচনা করে অনুসন্ধান কর্মকর্তা প্রতিবেদন দেবেন। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিশন পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, আবুল কাশেম মোল্লা ক্ষমতার অপব্যবহার করে গত ৯ বছরে ১০০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়েছেন। এর কোনো বৈধ উৎস নেই। তিনি ১৫ বছর আগেও ফুটপাতে কাঁচামালের ব্যবসা করতেন এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। কাউন্সিলর হয়ে তিনি আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। আরও বলা হয়েছে, তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শাহআলী থানার সাধারণ সম্পাদক। মিরপুরের শাহআলীর মসজিদুল আকবর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি তিনি। প্রতিষ্ঠানের সব আয় ১৯৮৬ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মাদ্রাসার অগ্রণী ব্যাংকের হিসাবে জমা হয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে মাদ্রাসা আইনের তোয়াক্কা না করে নিজেদের মতো কিছু টাকা অ্যাকাউন্টে জমা করে প্রায় ৩২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। মিরপুর-১-এর রাসেল পার্ক সংলগ্ন ডি ব্লকের ২ নম্বর রোডের ১৫ নম্বর প্লটে প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের একটি পাঁচতলা বাড়ি রয়েছে তার। মিরপুর শাহআলী মার্কেটের নিচতলায় প্রায় ২ কোটি টাকা মূল্যের ১ হাজার বর্গফুটের একটি দোকান আছে। মিরপুর-১-এর ডি ব্লকের ১১৩ নম্বর প্লটের পাঁচতলায় ১৬০০ বর্গফুটের একটি কোটি টাকার ফ্ল্যাট রয়েছে। মিরপুর-১-এ স্ত্রীর নামে ৫ কাঠা জমির ওপর ১৫ কোটি টাকা মূল্যের বাড়ি রয়েছে। মুন্সীগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি করেছেন তিনি। এ ছাড়া ৮-১০টি সরকারি প্লট জোর করে দখলে রেখেছেন। স্থানীয় কয়েকটি ব্যাংকে মোটা টাকা গচ্ছিত আছে তার। গ্রামের বাড়িতে অনেক সম্পত্তিও কিনেছেন।

এ বিষয়ে কাউন্সিলর আবুল কাশেম মোল্লা আকাশের বক্তব্য জানার জন্য ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

অনুগ্রহ করে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2014 sangbadsaradesh24
Theme Customized By BreakingNews