সংবাদ সারাদেশ টোয়েন্টিফোর.কম ডেস্কঃ
ওরা বিভিন্ন কলেজ, ইউনির্ভাসিটিতে পড়ুয়া ছাত্র। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারী বিধি-নিষেধের কারণে বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মানুষজনও গৃহবন্দী। এ বন্দি দশা পেরিয়েছে ১ মাস। নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত সবাই কর্মহীন। ঘরে নেই খাবার। ফলে ঘরে ঘরে ক্ষুধার্ত মানুষের হাহাকার।
মানুষের এসব আর্তনাত কাছ থেকে দেখলে যে কেউই নিজের সাধ্যানুযায়ী সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। এদের বেলায়ও তাই ঘটেছে। মানিকছড়ির প্রত্যন্ত জনপদে লোকলজ্জায় নিজেকে আড়াঁল করে রাখা ওইসব ক্ষুধার্ত মানুষের বাড়ি বাড়ি ত্রাণ-সামগ্রী নিয়ে হাজির উপজেলার চার শিক্ষার্থী। তাদের এই কাজ অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
বৈশ্বিক মহামারি ‘করোনাভাইরাস’ প্রতিরোধে দেশব্যাপি চলছে ঘোষিত ও অঘোষিত লকডাউন। যা পেরিয়েছে ১ মাস। ফলে তৃণমূল থেকে শুরু করে সর্বত্রই মানুষজন গৃহবন্দী।
সমাজের হত-দরিদ্র, অতি-দরিদ্র ও মধ্যবিত্তের সকলেই খাদ্যসঙ্কটে দূর্বিসহ জীবনযাপন করছে। এ অবস্থায় উপজেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ সরকারের বিভিন্ন বরাদ্দে ত্রাণ-সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রেখেছে। তারপরও অনেক পরিবারে এখনও ত্রান-সামগ্রী পৌঁছয়নি। ফলে এসব মানুষজন না খেয়ে দূর্বিসহ জীবনযাপন করছেন।
মানিকছড়ির ছাত্র-সমাজরা পৃথক পৃথকভাবে স্ব-উদ্যোগে অসহায় ও ক্ষুধার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে। কেউ দাঁড়িয়েছে ‘মানবিক মানিকছড়ি’র ব্যানারে। কেউ ছাত্র সংগঠনের ব্যানারে, আবার কেউ স্ব-উদ্যোগে।
মানিকছড়ি গিরিমৈত্রী ডিগ্রি কলেজে পড়ুয়া মোস্তফা আবির, মো: শরিফ, মো: জামাল ও হাবিব। তারা ৪ বন্ধু মিলে নিজস্ব অর্থায়নে করোনায় মানুষজন গৃহে আবদ্ধ হওয়ার পর থেকে উপজেলার শান্তিনগর, সাপুরিয়াপাড়া, রহমাননগরসহ বিভিন্ন এলাকায় খাদ্য সমাগ্র পৌঁছে দিচেছন। ইতোমধ্যে ২৮ পরিবারে ত্রাণ-সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন তারা। সাধ্যানুযায়ী অন্তত ১শ’ পরিবারে ত্রাণ-সামগ্রী দিবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন তারা।
মো: মোস্তফা আবির বলেন, আমরা ছাত্র। নিজেরা এখনও কোনো আয় করি না। কিন্তু মানবতার দুঃখ, ক্ষুধার্তের আর্তনাদ আমাদের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। তাই ভাবছি কলেজ খোলা থাকলে প্রতিদিন যেভাবে পকেট খরচ করতাম। অন্তত এখন মানুষের দূর্ভোগে সে টাকার সাথে আরো কিছু যোগান দিয়ে অসহায়দের পাশে দাঁড়াই। কারণ মানুষ মানুষের জন্য। আমরা নিজেরা ত্রাণ-সামগ্রীর প্যাকেট কাঁধে নিয়ে ক্ষুধার্তের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছি।
Leave a Reply