মো.আজিজুল ইসলাম
……………………………………………….
মদীয় বাড়ি মানিকগঞ্জ সদরে।মদীয় বড় মামার আবাস গাবতলিতে ।সহসা আপন চিত্তে মামার আবাসে যাইবার নিমিত্তে তীব্র বাসনা জাগিয়া উঠিলো।তাহা ভাবিয়া মামার আবাসে যাইবার নিমিত্তে আমি মনস্থির করিলাম।পরেরদিন প্রভাতে উঠিয়া আমি মানিকগঞ্জ হইতে বাসে উঠিয়া পড়িয়াছি। বাসে যাত্রী অপেক্ষাকৃত কম বলিয়া সিটে বসিতে পারিলাম।আমার পার্শ্বের সিট-টি খালি পড়িয়া রহিয়াছে।কিছুক্ষণ পশ্চাতে একটি সুন্দরী বালিকা উঠিয়া আমার পার্শ্বে বসিয়া পড়িলো।আমি মুখ ফুটিয়া কিছু বলিবার পূর্বেই মেয়েটি ভদ্রতার সহিত আমার নামটি জানিবার ইচ্ছা পোষণ করিলো।আমিও তাহাকে ভদ্রতার সহিত নামটি বলিয়া চুপটি করিয়া বসিয়া রহিলাম।আমি মামার মুখে বহুবার শুনিয়াছি বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েরা প্রথমেই ভাব জমাইবার চেষ্টা করিয়া তাহাকে নিঃস্ব করিয়া চলিয়া যায়।আমি ইহা চিন্তা করিয়া সতর্ক থাকিবার প্রয়াস করিলাম।
মেয়েটির মুখের দিকে ভালো করিয়া তাকাইয়া আমি পূর্বের সর্ব অভিপ্রায় ভুলিয়া গেলাম।মেয়েটি আমাকে প্রীতির কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করিলেন, আপনি কোথায় যাইতেছেন?আমি তাহাকে শ্রুতিমধুর করিয়া বলিলাম, আমি মদীয় মামার আবাসে বেড়াতে যাইতে মনস্থির করিয়াছি। আমি তাহাকে এখনো কিচ্ছুটি জিজ্ঞাসা করিনি।মনে মনে ভাবিলাম মেয়েটি কোনো খারাপ লোক হইবার পারেনা।তদপেক্ষা আমি তাহার সহিত বন্ধুত্ব করিবার পাড়ি।তাহাতে আমার সময়টাও ভালো কাটিয়া যাইবে।তাহাকে আমি জিজ্ঞাসা করিলে তিনি আমাকে বলিলেন তাহার নাম মেঘলা।ইহা শুনিয়া আপন চিত্তে ভাবিলাম তাহার নামেই যেন সহস্র প্রীতি লুকাইয়া রহিয়াছে।পূর্নিমার চন্দ্রের মতো মুখখানিতে ক্লেশের ছাপ ফুটিয়া রহিয়াছে। তাহার সহিত একটু সুন্দর বচনে তদীয় মুখে হাসির উপসর্গ দেখিতে পাইয়াছি।তাহাকে আমি মেঘলা ভগ্নী বলিয়া সম্বোধন করিলে তিনিও আমাকে ভ্রাতা বলিলেন।
বচনে বচনে দুজনের ভিতরে সুসম্পর্ক গড়িয়া উঠিলো। আপনি হইতে তুমিতে চলিয়া আসিলাম।উল্লাসের সহিত আমি তাহার থেকে মোবাইল নাম্বার টা চাহিয়া নিয়াছি।বচনে তাহার মধু আর চিত্তে সরলতা।রূপে তাহার অগ্নি জ্বলে!আঁখিতে বৈদ্যুতিক শক। বক্ষে অসীম ভালোবাসা!সহসা বালিকাটি মম হস্তে তাহার হস্ত রাখিয়া মদীয় অক্ষি যুগলের দিকে তাকাইয়া রহিলেন।আমি যেন তাহাতে আপন চিত্তে লজ্জা অনুভব করিতে লাগিলাম।জানালা হইতে আসা পবনে তাহার উন্মত্ত কুন্তল গুচ্ছ উড়িতেছে।কল্পণায় দু’জনে অনুরাগের অনলে পুড়িয়া যাইতে আরম্ভ করিয়াছি। দু’জন দু’জনের দিকে তাকাইয়া চিত্তের হর্ষে তামাশা করিতে আরম্ভ করিলাম।কিছুক্ষণ পর মেঘলা মদীয় পায়ে তাহার জুতাহীন কোমল পা-খানি আমার পায়ের উপর রাখিলো।তাহার পদতলে মোহার পা-দুটি চাপা পড়িলে পুনরায় মদীয় হৃদয়ের সাগরে জোয়ার উঠিলো।মেয়েটি দুষ্টমির সহিত মম গাত্রে প্রায়শ দ্বাদশ বার চিমটি কাটিলো।
মেয়েটি দেখিতে বালিকা হলেও আসলে মেয়েটি যুবতী। মেঘলা আমাকে নানা কার্যকলাপের মাধ্যমে উত্তেজিত করিবার প্রয়াস অব্যাহত রাখিলো।কোনো যুবতী মেয়ে তাহার নরম তুলতুলে হস্তখানি কোনো যুবকের হস্তে রাখিলে এমনিতেই যুবকটি দুর্বলতা অনুভব করিতে থাকে।মদীয় এত কিছু বুঝিয়া উঠিবার বয়স হয়নি।বাসে অন্য যাহারা উপস্থিত ছিলেন তাহারা হয়তো ভাবিয়াছেন মেঘলা মম নব বধূ।মোহার মস্তকে মেয়েটির অশরীরী ঢুকিয়া গিয়াছে।বচনে বচনে মেঘলাকে মোহার ব্যক্তিগত সর্ব কিছু বলিয়া ফেলিয়াছি।ইতিমধ্যে আমরা সিংগাইর আসিয়া পড়িয়াছি।সিংগাইর স্ট্যান্ড থেকে মেঘলা আমাকে কাঁচা আমের ভর্তা ক্রয় করিয়া খাওয়াইলেন।আমি কখন যে বন্য পক্ষির ন্যায় তাহার শিকার হইয়া পড়িয়াছি নিজেই তাহা বলিতে পারিবোনা।
মেঘলা আমাকে বিস্তর অনুরোধ করিয়া বলিলো আমি যেন হেমায়েতপুর নেমে তাহার সহিত বিরিয়ানি খাওয়ার পশ্চাতে অন্য বাসে চড়িয়া গন্তব্যে ফিরি।ইহাতে বেশ মজাও হইবে।তাহাকে মিত্র ভাবিয়া সরল চিত্তে কোনো কিছু অভিপ্রায় না করিয়া তাহার প্রস্তাবে রাজি হইয়া গিয়াছি।দুজনে হেমায়েতপুর নামিলাম।মেঘলা আমাকে একটা উন্নতমানের রেস্টুরেন্টে নিয়া গেল।
সেখানে অবস্থান করিয়া আমি অনুধাবন করিতে পারিলাম ইহা তো মেয়ে নহে বরঞ্চ সর্প,সর্প মম সর্ব নাশ করিয়া ছাড়িবে।আমাকে যেথায় নিয়া গিয়াছে সেথায় মেয়েটির আস্তানা। তাহার সে কক্ষে আরো ৫জন লোক রহিয়াছে।তাহারা বলিলো তাহাদিগকে পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে হইবে নহিলে আমার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা দায়ের করিয়া এবং পাবলিক ডাকিয়া গণধোলাই দিয়া উন্নত চর্মকারের তৈরি জুতার মাল্য দিয়া ষোড়শ গাঁ ঘোরাবে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করবে মদীয় প্রতিকৃতি এবং পত্রিকায় ছাপাইবে, টেলিভিশনেও দেখাইবে।মদীয় আবেগ তখন বেবিলনের মতো ছাই হইয়া পবনে উড়িয়া গেল। তাহাদের এসব উক্তি শুনিয়া মম মস্তকে গগন ভাঙিয়া পড়িলো।বুঝিয়া উঠিতে ব্যর্থ হইলাম, যেথায় একটু পূর্বে পলাশ পুষ্প ফুটিয়া রহিয়াছিলো তঁহিতে কিভাবে গোখরা সর্প উপস্থিত হইলো।
তাহাদিগকে ঢের অনুরোধ করিলাম মোহার সান্নিধ্যে এত টাকা নাই।মদীয় নিকট হাজার পাঁচেক টাকা ছিল তাহা দিতে সম্মত হইলাম কিন্তু উহারা তাহা গ্রহণ করিবে না।ভগ্নী হইয়া ক্রোড়ে জড়াইয়া দধি খাওয়াইয়া দন্ত ভাঙিয়া ক্লিষ্টের ছত্র হস্তে ধড়িয়ে দেওয়ার ফন্দি এঁটেছে ইহারা।অভিপ্রায় করিতে করিতে জিহ্বা শুষ্ক হইয়া পড়িয়াছে।উহারা আমাকে অষ্টবার চড় মারিয়া দ্বাদশবার গালি দিয়াছে।আমি মেঘলার মুখের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকাইয়া ভাবিতেছি পূর্নিমার চন্দ্র সহসা মেঘ দিয়া ঢাকিয়া গেল কিভাবে!তাম্রের লাঠি হস্তে নিয়া উহারা সকলে ষণ্ডের ন্যায় উৎপাত শুরু করিতে লাগিলো।
আপন চিত্তে ভাবিলাম বাঁচিয়া থাকিলে ঢের টাকা রোজগার করিতে পারিবো।উহারা টাকার লিপ্সায় কি করিয়া ফেলিয়া দিবে তাহা বোঝা বড় মুশকিল। অদ্যাপি কদাচিৎ কোনো মেয়ের সহিত কিঞ্চিৎ খারাপ আচরণ করিনি।পশ্চাতের সর্বকিছু ভুলিয়া আগামী কল্যের অভিপ্রায় করিয়া তাহাদিগকে টাকা দিতে সম্মত হইলাম।
উহাদের মোবাইল দিয়া মদীয় মাতার নিকট ফোন করিয়া বলিলাম, যদ্যপি আমাকে ফিরিয়া পাইতে চাও তাহা হইলে কিচ্ছুটি না ভাবিয়া ৫লক্ষ টাকা নিয়া হেমায়েতপুর চলিয়া আসো। কথা বলিবার সময় উহারা ছুরি নিয়া ভীতি প্রদর্শন করিয়াছে, যাহাতে আমি তাহাদের বিরুদ্ধে কিচ্ছুটি না বলিয়া ফেলি।
কিছুক্ষণ পরে তাহাদের একজন গিয়া মম মাতার নিকট হইতে টাকা নিয়া আসিলো এবং মদীয় লোচন যুগল ও হস্ত যুগল বাঁধিয়া রেখে চলিয়া গেল।আমি হাঁটিতে হাঁটিতে মানুষের মাঝে চলিয়া আসিলে তাহারা মদীয় বাঁধন খুলিয়া দিলো।আমি তাহাদের একজন ব্যষ্টির নিকট হইতে মোবাইল নিয়া মাতার সান্নিধ্যে ফোন করিয়া তাহাদের সহিত আপন নিলয়ে ফিরিয়া আসিলাম।
আপনাদিগকে শ্রদ্ধার সহিত বলিতে চাই আপনারা সকলে সর্ব সময় সতর্ক থাকিবার প্রয়াস করিবেন।আমার মতো নারী রুপি সর্পের অনুরাগে পড়িয়া আঁখি যুগলে সরষেফুল দেখিবেন নহে।তাহা হইলে বিপদ থেকে রক্ষা পাইবার পারেন।নারীর প্রেম লাভের বাসনা জাগিবে কিন্তু সর্ব সময় তাহা লাভের প্রয়াস করিবেন না।কেহ অতিরিক্ত প্রীতি দেখাইলে তাহাকে ভালো করিয়া জানিবার পূর্বে মিত্রতা না করাটাই শ্রেয় বলিয়া মনে করি।স্বল্প সংখ্যক দুষ্ট নারীর নিমিত্তে সমগ্র নারী জাতির দুর্নাম…!!
Leave a Reply