সংবাদ সারাদেশ টোয়েন্টিফোর.কম (আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ)
কাতারে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, সঙ্গে বাড়ছে ঝুঁকিও। লকডাউনে রয়েছে শিল্পাঞ্চল সানাইয়া। এমন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন কোম্পানিতে অল্প বেতনে কাজ করা বাংলাদেশিরা মানবেতর জীবন পার করছেন। বিপাকে আছেন ফ্রি ভিসার প্রবাসীরও। তাদের সহায়তায় সামনে এগিয়ে এসেছেন বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর ড. মুস্তাফিজুর রহমান।
ড. মুস্তাফিজ বিপাকে পড়া বাংলাদেশিদের সাহায্যে নিয়েছেন এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ। বিরামহীনভাবে ছুঁটে চলেছেন কাতারের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে। সাহায্য করছেন আর্থিকভাবে বা খাদ্যপণ্য দিয়ে।
কাতারের বিভিন্ন কর্মহীন শ্রমিক, অসহায় কর্মী ও দেশটিতে বসবাসরত পরিবারগুলোরও নিয়মিত খোঁজ নিচ্ছেন ড. মুস্তাফিজ। নিজ অর্থায়নে যা পারছেন করছেন। এ ছাড়া সরকারি, কোনো দানশীল প্রতিষ্ঠান বা বেসরকারী সংস্থার সহায়তায় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছেন বাংলাদেশিদের দুয়ারে দুয়ারে।
বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি ড. মুস্তাফিজের এই স্বেচ্ছা সাহায্যের ব্যাপারে আমাদের সময়কে নিশ্চিত করেছেন। তারা বলছেন, রাত নেই, দিন নেই ড. মুস্তাফিজ তাদের ঘরে ঘরে গিয়ে ত্রাণ পৌঁছাচ্ছেন। অনেকে রাতে ঘুমিয়ে সকালে উঠে ঘরের সামনে দেখতে পান ত্রাণ পড়ে আছে।
যেসব বাংলাদেশি বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন, তাদেরও প্রতিনিয়ত খোঁজ নিচ্ছেন বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর ড. মুস্তাফিজুর রহমান। সব মিলিয়ে কাতারে তিনি মানবতার ফেরিওয়ালা বিশেষণে পরিচিত।
কাতারস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে শ্রম কাউন্সিলর হয়ে যোগদানের পর থেকে নিয়মিত রুটিনে কাজ তো করেনই, এর বাইরেও অনেক কাজে দেখা যায় ড. মুস্তাফিজকে। কাতার এয়ারওয়েজে যাতায়াতকালীন কোনো বাংলাদেশি অসুস্থ হলে সাথে সাথে ছুঁটে যান তিনি। তাদের নিরাপত্তা ও চিকিৎসার জন্য রাতবিরাতে হাসপাতালে দৌঁড়াদৌঁড়ি করেন।
কাতারে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে ড. মুস্তাফিজুর রহমানকে বলা হয় শ্রমিক বান্ধব শ্রম কাউন্সিলর। তার কার্যালয়ে বিনা বাঁধায় আসতে-যেতে পারে যে কেউ। তার কাছ থেকে কেউ খালি হাতে ফিরেছেন, তাও বলতে পারেন না প্রবাসীরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সরকার থেকে পাঠানো সহায়তা দূতাবাসে পৌঁছায়। সেগুলো নিজ তত্ত্ববধায়নে রেখে বিতরণের ব্যবস্থা করছেন বলে আমাদের সময়কে জানান বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর ড. মুস্তাফিজুর রহমান। এ ছাড়া দেশে থাকা এক প্রবাসীর পরিবারের কাছেও সহায়তা পাঠানোর কথা জানান তিনি।
ড. মুস্তাফিজুর আমাদের সময়কে বলেন, ‘দূতাবাসে প্রতিদিন কর্মহীন অসহায় বাংলাদেশিরা ত্রাণের জন্য আসেন। আমি নিজে উপস্থিত থেকে সেখানে ত্রাণ বিতরণ করছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এভাবে সহায়তা প্রদান অব্যাহত থাকবে।’
কাতারে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৬৬৩ জন। মারা গেছেন মাত্র সাতজন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪৬৪ জন।
Leave a Reply