1. nasiruddinsami@gmail.com : sadmin :
করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে ফুলচাষীরা বিপাকে - সংবাদ সারাদেশ ২৪
মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৪০ পূর্বাহ্ন

করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে ফুলচাষীরা বিপাকে

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১০ এপ্রিল, ২০২০
  • ৬৫ বার

মো. আলতাফ হোসেন,

ফুল হচ্ছে উচ্চ মূল্যমান একটি কৃষিপণ্য। আধুনিক সমাজে ফুলের বহুমুখী ব্যবহারের কারণে শুধু মৌখিকতায় নয় ফুল এখন বিরাট অর্থকরী ফসল। বাংলাদেশে মানুষের আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশে ফুলের চাহিদাও বাড়ছে। শ্রদ্ধা,ভালোবাসা, বন্ধুত্ব ও মননশীলতার প্রতীক এই ফুলকে ঘিরে জেগে ওঠেছে কৃষি অর্থনীতির নতুন সম্ভাবনা।

দেশের অনেক জায়গায় বানিজ্যিকভাবে ফুলের চাষ হচ্ছে। এদের মধ্যে থেকে কিছু সংখ্যক ফুল বানিজ্যিক ভিত্তিতে আবাদ হচ্ছে মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর,সিংগাইর,শিবালয় ও সাটুরিয়া এলাকায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফুল চাষ হয় সিংগাইরের তালেবপুর, বায়রা, জয়মন্টপ, সায়েস্তা ও ধল্লায়। এসব এলাকায় মাঠের পর মাঠ ফুলের সমারোহ দেখে অবাক নয়নে তাকিয়ে থাকে সবাই। জেলায় প্রায় সাড়ে ৩ শ’ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষের মধ্যে শুধু সিংগাইরেই প্রায় ২ শ’ হেক্টর জমিতে হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের আবাদ।

এদের মধ্যে বাহারী রঙের গোলাপ, গোলডিওলাস, গাঁদা, বেলি, রজনীগন্ধা, গন্ধরাজ, লিলি,টিউলিব,ডালিয়া,চম্পা, হাসনাহেনা, শিউলি, ড্যাফোডিল, চন্দ্রমল্লিকা, লুপিন, ডায়ানথাস, নিংগ্লোরি, র‌্যাফেলেসিয়া, মাধবিলতা, নাগালিঙ্যাম, অর্কিড ফুলের চাহিদা বেশি বেশি হওয়ায় এর আবাদ তুলনামূলক ভাবে বেশি হচ্ছে। বানিজ্যিক ফুল চাষ করে মানিগঞ্জের দেড় শতাধিক ফুলচাষী এখন স্বাবলম্বী। ফুলেই ঘুরেছে তাদের ভাগ্যের চাকা। তাদের সাফল্য দেখে উৎসাহিত হয়েছেন এলাকার অনেক কৃষক। এ ক্ষেত্রে শিক্ষিত বেকার যুবকদের অংশগ্রহনও চোখে পড়ার মতো।

রাজধানী ঢাকার পাশর্^বর্তী মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা ইতিমধ্যেই ফুলের জন্য বেশ পরিচিত লাভ করেছে। অন্যান্য ফসলের লাভ বেশি হওয়ায় বানিজ্যিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৌর এলাকাসহ এ উপজেলার বলধারার দশানি, বাস্তা, খাসেরচর,বাইমাইল, জামালপুর, চারাভাঙ্গা,কালিয়াকৈর, শায়েস্তার কানাইনগর, ধল্লার ফোর্ডনগর, জার্মিত্তা, জয়মন্টপ ও তালেবপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে দুই শতাধিক বিঘা জমিতে বানিজ্যিকভাবে ফুলের আবাদ হচ্ছে এবং জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।

সিংগাইর উপজেলার তালেবপুর উইনিয়নের কাশেমপুর গ্রামে সরেজমিনে দেখা গেছে, তালেবপুর ইউনিয়নের কাশেরপুর গ্রামে মো. শাহীনুর রহমান বিস্তীর্ণ জায়গা জুড়ে শুধু গোলাপের চাষ করেছেন।অন্যান্য ফুলের মধ্যে গ্লাডিওয়াস, অস্টার, জিফসির জন্য ৮ বিঘা জমিতে ফুলের চাষ করেছে। ফুলের সমারোহ ওই বাগানে শোভা পাচ্ছে।

ফুলচাষী মো. শাহীনুর রহমান বলেন, আমি প্রথমে ২ বিঘা জমির লিজ নিয়ে ১৯৯৬ সালে ৪০ হাজার টাকার বিনিয়োগে সাভার থেকে ৩ প্রকার গোলাপ সাদা ৫ হাজার, লাল ২ হাজার ও হলুদ ১ হাজার মোট ৮ হাজার চারা ক্রয় করি। এক বছরের মাথায় বিনিয়োগকৃত টাকা উত্তোলন হয়। চারা রোপনের ১৫ দিন পর ফুল কেটে এ ফুল ফোটার এক মাস পর বাজারজাত করি আগারগাঁও। খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ১ লক্ষ টাকা আয় হয়। ১৮ বছর যাবৎ তিনি এ ফুল ব্যবসার সাথে জড়িত। তার এ ফুল চাষের জন্য প্রতিদিন ৪০০ টাকা করে মোট ৭জন লেবারকে মজুরি দিতে হয় ২৮০০ টাকা। অর্থাৎ মাসে তার এই ফুল চাষের জন্য লেবার বাবদ খরচ হয় ৮৪ হাজার টাকা। আর কিটনাশক ও সার বাবদ খরচ মাসে ৮০ হাজার টাকা। গেল বছরে ২৫-৩০ লক্ষ টাকা আয় করেন এই ফুল চাষী।

মো. শাহীনুর রহমান জানান, তিনি ১৯৯৬ সাল থেকে বানিজ্যিকভাবে ফুল চাষ শুরু করেন। প্রথমে ২ বিঘা জমিতে ফুলের চাষ করেন। আর এ থেকেই তার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যায়। ফুলের চাহিদা দেখে পরবর্তী বছরে তিনি সাড়ে ৬ বিঘা জমিতে ফুল চাষ করেন। তার উৎপাদিত ফুল এলাকার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে থাকেন। ফুল চাষ করে প্রতি বছর বিঘা প্রতি লক্ষাধিক টাকা আয় হয় বলে ফুল চাষী মো. শাহীনুর রহমান জানান। বর্তমানে তিনি শুধু গোলাপ চাষ করেন ১৭-১৮ বিঘা জমিতে। অন্যান্য ফুলের মধ্যে যেমন-গøাডিওয়াস,অস্টার,জিপসির জন্য ৮ বিঘা জমিতে আবাদ করেন ফুল চাষী মো. শাহীনুর রহমান।

চলতি মাসে তার ৭-৮ লাখ টাকা লাভ হওয়ায় সম্ভাবনা ছিলো। কিন্তু গত ১৮ মার্চ থেকে করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের কারণে মার্কেট বন্ধ থাকায় তার লোকসান গোনতে হচ্ছে প্রতিদিন ৫ হাজার টাকা।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2023 SangbadSaraDesh24.Com
Theme Customized By BreakingNews