আব্দুর রাজ্জাক,
বুধবার বেলা এগোরোটা। অনেকটা জন মানবশূণ্য চারিপাশ। ঘিওর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রোগী ভর্তি হয়েছে মাত্র ১জন। নারী, পুরুষ ও শিশু ওয়ার্ডসহ ৫০ শর্যা বিশিষ্ট ৩টি ওয়ার্ডই রোগী শূন্য। সারা সপ্তাহ জুড়েই পুরুষ, মহিলা ও শিশু ওয়ার্ড মিলে হাতেগোনা অল্প কয়েকজন রোগী ভর্তি হয়েছিল। বাকি পুরো স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেডগুলো নোংরা, ময়লা অস্বাস্থ্যকর অবস্থায় খালি পড়ে আছে। তবে মুঠোফোনে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সংক্রমনের ভয়ে রোগীশূন্য হয়ে পরেছে মানিকগঞ্জের ঘিওর স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। শিশুরোগী ছাড়া অন্য কেউ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেনা। রোগী না থাকার দরুন হাসপাতালটি খাঁ- খাঁ করছে।
সরেজমিন পরির্শন করে দেখা গেছে, পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি ১ জন, নারী ওয়ার্ডে ভর্তি ১ জন। শিশু ওয়ার্ডে কোন রোগী নেই। জরুরী বিভাগ ও আউটডোরে একেবারেই কমে গেছে রোগীর সংখ্যা । করোনা আতঙ্কেও অনেক রোগী স্বাস্থ্য কেন্দ্র ছেড়ে চলে গেছে। গত ২৪ ঘন্টায় হাসপালে জরুরি বিভাগে ৬ জন আউটডোরে ১৬ জন পুরুষ এবং ১৮ জন নারী ও ৮ জন শিশু রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়েছে। তবে আগে যেখানে গড়ে প্রতিদিন ৩শ’ থেকে ৪শ’ রোগী সেবা নিতে আসতো। সেখানে গত এক সপ্তাহ যাবৎ ৭০ থেকে ৮০ জন রোগী হয়না। তবে সাধারন রোগীদের মতো চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা ভাইরাস আতঙ্কে রোগীদের চিকিৎসা দিতে চায়না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
আরো পড়ুন: পাবনায় চিকিৎসা না পেয়ে ৬মাসের শিশু মৃত্যুর অভিযোগ
হাসপাতাল গেটের জনৈক ওষুধ ব্যবসায়ী জানান, তিনি প্রায় ১০ বছর যাবৎ ওষুধ ব্যবসার সাথে জড়িত কিন্তু হাসপাতালে এত কম রোগী তিনি পূর্বে কখনও দেখেননি। দু’ একজন ওষুধ কেনার জন্য হাসপাতালে আসলেও তারা তরিঘড়ি করে ওষুধ নিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছেন। মনে হচ্ছে, হাসপাতালে এলাকা ছাড়তে পারলেই তারা বেঁচে যাবেন। আবার অনেকের মধ্যে মরণঘাতী করোনা ভাইরাস নিয়ে চলছে অজানা ধরনের বিভিন্ন আতঙ্ক। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্র্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের বলেছেন, বিশ্বের সঙ্গে আমাদের দেশের মধ্যকার সতর্কীকরনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনেক রোগী কমে গেছে। ডিজিটাল যুগে অনেকেই বাড়িতে বসে রোগ ব্যাধির জন্য মুঠোফোনে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিচ্ছেন।
আরো পড়ুন: সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শিবালয় উপজেলা প্রশাসনের খাদ্য সহায়তা
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার সমেন চৌধুরী জানান, ডাক্তার, নার্সসহ সকল কর্মকর্তা কর্মচারী হাসপাতালে রয়েছেন। শিফট অনুযায়ী সকল ডাক্তার ও নাসর্রা চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। করোনা আতঙ্কে ভাইরাস জনিত কারনে বেশিরভাগ রোগী হাসপাতালে আসতে চায়না না। তারা ফোনে প্রয়োজনীয় সেবা নিচ্ছেন।
করোনা ভাইরাসে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সচেতন থাকার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ঘিওরে এখন পর্যন্ত কোন রোগী সনাক্ত না হলেও আইসোল্যুশনের জন্য হাসপাতালে ৩ শয্যা বিশিষ্ট একটি ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সাবধানতার কারনে করোনা সংক্রমণের ভয়ে মানুষ এখন হাসপাতাল এড়িয়ে চলতে চাচ্ছেন। তবে আমাদের সকল ডাক্তার হাসপাতালে রোগীদের সেবার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আমরা সকল প্রকার কার্যক্রম চালাচ্ছি। জরুরি বিভাগ সব সময় খোলা আছে।
Leave a Reply