মানিকগঞ্জ সংবাদদাতাঃ
করোনা ভাইরাস একটি ছুয়াছে এবং প্রানঘাতি রোগ।সংক্রমণের এমন গুজবে কোথাও কেউ করোনা বা উপসর্গ নিয়ে মারা গেলে বাধাদেয়া হচ্ছে লাশ দাফনে । কোথাও আবার স্বজনরাও জানাজায় হাজির হচ্ছেন না। বাবার লাশ রেখে পালিয়ে যাচ্ছে সন্তানরা। মারা যাওয়া ব্যক্তিকে বহন করতে খাটিয়া দেয়া হচ্ছে না। গণমাধ্যমে এমন খবর আসছে হরহামেশাই ।
এমতবস্থায় করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের লাশ দাফনের জন্য জমি দিয়েছেন পুলিশের সিনিয়র এএসপি এনায়েত করিম রাসেল।
নিজের এলাকা মানিকগঞ্জে গংগাধর পট্রিতে এই জমি দিয়েছেন।
পুলিশের সিআইডিতে সিনিয়র এএসপি হিসেবে কর্মরত মো. এনায়েত করিম রাসেল বলেন, জমিটি নিজেদের পাশাপাশি বেওয়ারিশ লাশ দাফনের জন্য এক বছর আগে কিনেছিলেন।
আরও ২২ শতাংশ জমি কেনার প্রক্রিয়া চলছে। প্রয়োজন দেখা দিলে সেখানেও মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করা হবে ।
করোনায় মারা যাওয়া মানুষের দাফনের জন্য নিজের এমন উদ্যোগের কথা প্রকাশ্যেই ঘোষণা করেছেন এনায়েত করিম রাসেল। নিজের ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে রাসেল বলেন, মানিকগঞ্জে বাসা/ মানিকগঞ্জে বাসা কিন্তু বসবাস অন্য জায়গায় বা বাংলাদেশের যে কেউ আল্লাহ না করুক করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেলে বিনাসংকোচে নিয়ে আসুন। গংগাধরপট্টি চকে উত্তর-পূর্ব কোণে (নওখন্ডা) আমাদের কবরস্থানে তাকে দাফন করা যাবে। আশেপাশে কোনো জনবসতিও নেই। প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এখানে কবর দেয়া সবার জন্য উন্মুক্ত।
ইতিমধ্যে বিষয়টি জেলা প্রশাসকসহ পুলিশের উর্র্ধতন কর্মকর্তাদেরও জানিয়েছেন তিনি।
এই উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা এনায়েত করিম রাসেল বলেন, ‘গত বছর আমি জমিটা কিনেছি। যেখানে বেওয়ারিশ লাশ দাফন করতে পারবে এমন চিন্তা ছিল। কিন্তু করোনার আক্রমণের পর দেখতে পাচ্ছি অনেক জায়গায় লাশ দাফন করতে দেয়া হচ্ছেনা ।
আক্ষেপ করে ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘যারা কবর দিতে বাধা প্রদান করে তারা যেন আজীবন জীবিত থাকেন।’ তিনি জানান, তার দেয়া কবরস্থানে এখনো কোনো লাশ দাফন করা হয়নি। তবে সেখানে একটি খাটিয়ার ব্যবস্থা করা আছে, যাতে মরদেহ বহন করতে সুবিধা হয়।’
মানিকগঞ্জের ডিসি অথবা মেয়রের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করেছেন তিনি। পাশাপাশি নিজের মোবাইল নম্বর (০১৭৩০৩৩৬২২৩), ও তিন বন্ধু ডিএফএম লোটাস (০১৭৭৭৩০৫০১৬)ওশুভ(০১৭১২২৯২৯২২),মোস্তফা (০১৭১২৫৫৭০৮৬) যে কারো সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলেছেন এনায়েত করিম রাসেল।
মানিকগঞ্জের ডিসি এস এম ফেরদৌস জানান, যেখানে করোনার উপসর্গ নিয়ে মানুষ মারা গেলে লাশ দাফন নিয়ে নানা ধরনের প্রতিকূল অবস্থায় পড়তে হচ্ছে সেখানে এমন উদ্যোগ অবশ্যই মানবিকতার বড় উদাহরণ।
ডিসি এসএম ফেরদৌ আরো বলেন, ‘আমাদের আসলে সচেতন হতে হবে। কারণ মৃতদেহ থেকে করোনা ছড়ায় না। তারপরও কোথাও সমস্যা হলে আমরা এসব জায়গায় দাফন করবো। পুলিশ কর্মকর্তা এনায়েত করিম রাসেল ছাড়াও আরও দুই একজনের কাছ থেকে এমন প্রস্তাব পেয়েছি।
Leave a Reply