সংবাদ সারাদেশ টোয়েন্টিফোর.কম ডেস্কঃ
আশুলিয়ায় ডিইপিজেডের ৭০টি পোশাক কারখানাসহ ৩ শত ৫০ টির অধিক পোশাক কারখানা খুলেছে। এরমধ্যে হা-মীম গ্রুপের মালিকানাধীন নেক্সট কালেকশন নামে একটি পোশাক কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক সকালে কারখানাটি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। তাছাড়া সিগমা ফ্যাশন লিমিটেডের লে-অফকৃত কারখানাটি খুলে দেয়ার দাবিতেও শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছে।
সোমবার সকালে আশুলিয়ার বেরণ এলাকায় হা-মীম গ্রুপের মালিকানাধীন নেক্সট কালেকশন নামে একটি পোশাক কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক কারখানাটি বন্ধের দাবিতে সড়কে বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভকারীদের নিবৃত্ত করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে বলে শ্রমিকরা অভিযোগ করেছেন।
এ ব্যাপারে শ্রমিকরা জানান, হা-মীম গ্রুপের প্রধান শাখাসহ এর অধীন অন্যান্য পোশাক কারখানা খুলেনি। তাই তারাও কারখানাটিতে কাজ করতে রাজি নন। গতকাল সকালে কাজে যোগ দিয়ে শ্রমিকরা উৎপাদনে অংশ না নিয়ে কারখানা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পরে। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভে বাঁধা দিলে তারা রাস্তায় বসে পড়েন। একপর্যায়ে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করলে শ্রমিকরা সড়কের অবস্থান থেকে সড়ে পরে। এতে বেশকিছু শ্রমিক আহত হয়েছে বলেও শ্রমিকরা জানিয়েছেন।
ওদিকে আশুলিয়ার ধনাইদ এলাকার লে-অফকৃত সিগমা ফ্যাশন লিমিটেড কারখানাটির চাকরিচ্যূত কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ ৮শত ১৫ শ্রমিক কারখানাটি খুলে দেয়ার দাবিতে গেটের সামনে বিক্ষোভ করেছে। সেখানে বিক্ষোভরত শ্রমিকরা জানায়, তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধ না করে কারখানাটি হঠাৎ লে-অফ ঘোষণা করেছে। এতে শ্রমিকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাজ হারিয়ে তারা বেকার হয়ে পড়েছেন। প্রতিটি পরিবারের মাঝে দূর্ভিক্ষ দেখা দিবে। শ্রমিকরা এ বছর ঈদের আনন্দ থেকে তারা বঞ্চিত হবেন বলেও তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। অবিলম্ভে লে অফ কৃত কারখানাটি খুলে দেয়ার দাবি জানান তারা।
অপরদিকে ডিইপিজেডের ৭০ টি পোশাক কারখানাসহ আশুলিয়ার ৩ শত ৫০টি পোশাক কারখানা খুলে দেয়া হয়েছে। শ্রমিকরা উৎপাদনে অংশ নিতে পেরে যেমনি আনন্দিত পাশাপাশি আতঙ্ক আর চিন্তায় তাদের পুরো দিন কেটেছে। দীর্ঘদিন বন্ধ উপভোগ করার পর কারখানাগুলোতে উপস্থিতির হার ছিল অনেক কম। তাছাড়া বিশ্বব্যাপী ঘাতকব্যাধি করোনা আতঙ্ক তাদের ভাবনায় রেখেছে। কারখানাগুলোতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনায় যথেষ্ট ঘাটতির কথা তারা জানান। যেখানে শ্রমিকদের কাজ করার মূহুর্তে পিপি পড়ে কাজ করার কথা সেখানে এ ব্যবস্থা ছিল না। তথাপিও প্রয়োজনের চাহিদায় তারা কাজে যোগদান করেছেন বলেও জানান।
কারখানা সূত্র বলেছে, কারখানাগুলোতে নিজতস্ব ব্যবস্থাপনায় এবং পূর্ণ নিরাপত্তায় ও সচেতনাতার মাধ্যমে তারা উৎপাদন অব্যাহত রাখতে চান। অন্যথায় সামনে ঈদ কঠিন এক সমস্যায় পড়তে হবে তাদের। ইতোমধ্যেই অনেক অর্ডার বাতিল হয়েছে। এরপরও যদি তারা কাজ না করেন তাহলে কারখানাগুলো দেউলিয়া ঘোষনা করতে হবে। এমন পরিবেশ থেকে উত্তরণের জন্য শ্রমিকদের বাস্তব অবস্থার কারনে সকলের সম্মিলিত সচেতনতায় কারখানা খুলতে তারা বাধ্য হয়েছেন।
অন্যদিকে কারখানা খোলার সাথে সাথে আশুলিয়ায় সকাল থেকে স্থানীয় বাস, লেগুনা, মিনিবাসসহ কিছু পরিবহণ চলাচল করেছে। কারখানাগুলো তাদের নিজস্ব গাড়িতে শ্রমিকদের তাদের সুবিধামতো স্থান থেকে কর্মস্থলে আনা নেয়া করেছে। এর পাশাপাশি স্থানীয় পরিবহণগুলো চলাচল করেছে। এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ি বা বাধা নিষেধ ছিল না।
Leave a Reply